এর আগেও আমি আমার কলামে বলেছি_ উন্নয়ন তো চাই-ই; গণতন্ত্র কেন নয়? জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি-প্রতিরোধ এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে সরকারের যে ব্যর্থতা বেরিয়ে এসেছে তার মূলে রয়েছে গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করা। দেশের স্থিতিশীলতা কোনো এক পক্ষের দাবিতে নিশ্চিত হয় না। যেখানে গুম-অপহরণ, দমন-পীড়ন জনজীবনকে আতঙ্কে রাখে, জনগণ মুখ খোলার সাহস পায় না তা যে গণতন্ত্রের চরম লঙ্ঘন তা পাগলেও বোঝে।
বাস্তবতা হলো, উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে যে ছাড় দেয়ার কথা আমরা শুনেছি, তার ফলস্বরূপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি_ পদে পদে সুশাসন বিঘি্নত হয়েছে। দুর্নীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। যে কারণে উন্নয়ন-অগ্রগতি সার্বিকভাবে সবার জন্য না হয়ে একটি গোষ্ঠীতে তা সীমাবদ্ধ থেকেছে। যেমন বড় বড় প্রকল্প থেকে একটি মহল লাভবান হবে ঠিকই, কিন্তু তা জনগণের জন্য কতটা সুফল বয়ে আনবে তা একটা বড় প্রশ্ন।
২০০৬ ঃ ২০১৭ সালের পরিক্রমায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উন্নতির গতির যে ছক বেড়িয়েছে তা হলো যথাক্রমে চাল- ১৫ ঃ ৬০। লবণ- ১২ ঃ ৪০। মাংস- ১৮০ ঃ ৫০০। বিদ্যুৎ- ১.৬০ ঃ ৯-১২। গ্যাস ২ চুলা- ২৫০ ঃ ৯০০। সোয়াবিন তেল-৪০ ঃ ১১০। খাসির মাংস- ২৫০ ঃ ৭০০। জ্বালানি তেল_ ৩৫ ঃ ৬৮। ব্যাংক লেনদেন- ২ লাখ ৮০ হাজার : লাখে ১০০০ পর্যন্ত ফ্রি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি তা বলা যাবে না। তবে তা-ও সার্বিক চিত্র নয়।
রাস্তাঘাটের উন্নয়নে ফোর লেনের ছড়াছড়ি হলেও ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে এবং চট্টগ্রামে যাতায়াতে কোনো ঈদ-পার্বন ছাড়াই যাত্রীদের অবর্ণনীয় ভোগান্তি পোহাতে হয়। ৪ ঘণ্টার রাস্তায় সময় লাগে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা। আর ঢাকাসহ সারা দেশের রাস্তার খানাখন্দের চিত্র তো আছেই। উড়াল সেতুতে ঢাকা শহর ছেয়ে গেলেও যানজটে খাচ্ছে মানুষের শত শত কর্মঘণ্টা।
পুনশ্চ : শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অনেক সমালোচনা থাকতে পারে। কিন্তু সাফল্য নেই এ কথা হলফ করে বলা যাবে না। তবে সবকিছুর ঊধর্ে্ব সকলেই এখন গণতন্ত্র চায়_ দিতে চায় একটি ভোট।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।