যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল হিলের তা-বের খবর গোটা বিশ্বের জন্য আতঙ্কের। কিন্তু বিস্মিত হওয়ার মতো নয়। কারণ নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে গত দুই মাস যাবৎ ট্রাম্প যে বাগাড়ম্বর খেলছে তার চরিত্রের প্রতিফলনে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। যেখানে দাঙ্গাকে উস্কে দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, 'ওরা বের হয়েছে আমেরিকাকে বাঁচাতে', দুর্বলেরা বিদায় হোক, এটা শক্তি দেখানোর সময়।' সেখানে কংগ্রেসে এই হামলা স্বাভাবিক এবং বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এটা রাজনৈতিক উস্কানির ফল। তাছাড়া দেড়শ বছর ধরে আমেরিকার ইতিহাস জুড়ে এভাবেই শ্বেতাঙ্গদের শ্রেষ্ঠত্বের দৃষ্টান্ত চলে আসছে। এটা শ্বেত-সন্ত্রাসের দীর্ঘদিনের রূপ। মার্কিন রাজনীতির পুরোনো কৌশল।
এখন কথা হচ্ছে যে, এই ঘটনায় গোটা বিশ্বের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র চর্চার যে ব্যর্থতা তুলে ধরা হলো, তার কৈফিয়ত কি? বিশ্লেষক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, আমেরিকা কি আর অন্যদের গণতন্ত্রের আদর্শ ও চর্চার কথা বলতে পারবে? তাছাড়া গত চার বছর ধরে ট্রাম্প তার সমর্থকদের বুঝিয়ে আসছে যে, চারদিকে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এর বিপরীতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানিগুলোর বিরুদ্ধেও তাদের সহিংস করে তোলা হয়েছে এবং সহিষ্ণুতার সংস্কৃতিকে নস্যাৎ করে দিয়ে বিভক্তির মানসিকতা ছড়িয়ে দিয়েছে যা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব শুধু আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেই নয়, গোটা বিশ্বের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে। এখানে উল্লেখ্য যে, ইতোমধ্যেই ট্রাম্পের এই বিভক্তিমূলক সংস্কৃতির চর্চায় অনেকটাই এগিয়ে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এমনকি বিশ্বে এমন অনুসারীদের অভাব নেই। এভাবে একনায়কত্বের চর্চা বাড়তে থাকলে বিশ্বের দেশে দেশে অশান্তি চরমে উঠতে বেশি সময় লাগবে না।
পুনশ্চ : পরাশক্তি রাষ্ট্রগুলোতেই যদি এভাবে রাজনৈতিক সহিংসতা চলতে থাকে, তাহলে অপেক্ষাকৃত দুর্বল রাষ্ট্রেগুলোর সামনে কি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকছে? আর এর জন্য যে মহানায়কেরা ভূমিকা রাখছেন তাদের বিচার করবে কে?
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।