তুচ্ছ ঘটনায় বাড়ছে নৃশংসতা
শরণখোলায় ছয় মাসে ৫ খুন
শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
বাগেরহাটের শরণখোলায় তুচ্ছ ঘটনায় দিন দিন বাড়ছে নৃশংসতা। পারিবারিক কলহসহ নানা ঘটনায় ঘটছে হত্যাকা-ের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা। চলতি বছরের গত ছয় মাসে নানা কারনের জের ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে সংগঠিত হয়েছে পাঁচটি হত্যাকা-।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সম্পত্তি বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে খুমেক হাসপাতাল হতে নিজ বাড়ি ফেরার পথে গত ১০ মে,আমড়াগাছিয়া এলাকায় মারা যান উপজেলার উত্তর তাফালবাড়ী এলাকার বাসিন্দা কৃষক মো. শাহ-আলম খন্দকার (৬৫)। এ ঘটনায় তার স্ত্রী মোসা-সাহিদা বেগম বাদী হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে শরণখোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দ্ধায়ের করেন ।
অপরদিকে, পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়া-বিবাদকে কেন্দ্র করে বোনের ইন্ধোননে ভগি্নপতি ও তার ছেলের পিটুনিতে চলতি বছরের ১৪মে উপজেলার ধান-সাগর এলাকার বাসিন্দা দিনমজুর মো. আ. সবুর শিকদার (৪৫) তার নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় নিহত হন । এ ঘটনায় সবুরের স্ত্রী মোসা-হেলেনা বেগম বাদী হয়ে তিন জনের নামে শরণখোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দ্ধায়ের করেন। এছাড়া , বীজতলায় ছাগল যাওয়াকে কেন্দ্র করে ২৫ আগষ্ট প্রতিপক্ষের বেধাড়ক পিটুনিতে ধানসাগর গ্রামের আরেক বাসিন্দা কৃষক মো. জাকির হোসেন জোমাদ্দার (৫৫) নিহত হন । এ ঘটনায় তার স্ত্রী শিউলি বেগম বাদী হয়ে সাত জনের বিরুদ্ধে শরনখোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দ্ধায়ের করেন । তাছাড়া স্ত্রীকে নিয়ে দ্বন্দের জের ধরে প্রতিপক্ষের হাতুড়ি পিটা সহ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেড়িকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১ আগস্ট মারা যান উপজেলার পশ্চিম কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ শাহ-আলম বিশ্বাস (৪৮)। পরে নিহতের ছোট ভাই মো. ফারুক বিশ্বাস বাদী হয়ে সাত জনের নাম উল্লেখ করে গত ৪ আগষ্ট শরনখোলা থানায় একটি হত্যা মামলা রজু করেন । এবং
পারিবারিক কলহের জের ধরে সর্বশেষ গত ৭ অক্টোবর গভীর রাতে উপজেলার তাফালবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির কনেষ্টবল মোঃ সাদ্দাম হোসেন তার ৬ মাসের অন্তসত্বা স্ত্রী মোসা-জোসনা বেগমকে (৩৫) নৃশংসভাবে হত্যা করে। ওই সময় জোসনা সহ তার গর্ভের সন্তানের মৃত দেহ টুকরা টুকরা করে নদীতে ফেলে দেয়ার উদ্দেশ্যে বস্তাবন্দী করে লুকিয়ে রাখে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শরণখোলা থানা পুলিশ চলতি মাসের ১০ অক্টোবর ভোর রাতে উপজেলার তাফালবাড়ী বাজারস্থ সাদ্দামের ভাড়াটিয়া বাসা থেকে জোসনা ও তার গর্ভে থাকা সন্তানের বস্তাবন্ধী টুকরা টুকরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া সাদ্দামকে তাফালবাড়ীর ওই পুলিশ ফাঁড়ি হতে কর্মরত থাকা অবস্থায় আটক করেন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক জেলা পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়সহ পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় নিহত জোসনার মা জুলেখা বেগম বাদী হয়ে ঘাতক সাদ্দামের বিরুদ্ধে ৯ অক্টোম্বর শরণখোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত জোসনার বাড়ি খুলনা জেলার রূপসা থানার চানপুর গ্রামে।
এছাড়া সাদ্দাম সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার বড়দল গ্রামের বাসিন্দা আ. লতিফের ছেলে। সে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় জানান, উক্ত মামলাগুলোর অধিকাংশ আসামীরা কারাগারে আছে। তবে, মহামান্য হাইকোট থেকে ২/১ জামিনে রয়েছে এবং যারা পলাতক আছে তাদের ধরতে পুলিশ অনুসন্ধান চালাচ্ছেন। এছাড়া নিহতদের পরিবারের স্বজনেরা যাতে ন্যায় বিচার পান সে জন্য প্রত্যেটি মামলার নিরেপেক্ষ তদন্ত করে আদালতে তার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্টদের ইতিমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।