অন্ধ কল্যাণ সংস্থার মহাসচিব খলিল হত্যায় ২ আসামির ফাঁসি
স্টাফ রিপোর্টার
রাজধানীর শাহ আলীবাগের জনতা হাউজিং এলাকায় সাত বছর আগে জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সংস্থার মহাসচিব খলিলুর রহমানকে হত্যার ঘটনায় দুই জনের ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।
মামলার অপর চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদ এবং ২০ হাজার জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারদ- দেওয়া হয়েছে। ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার সোমাবর আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করনে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর চার আসামিকে খালাস দিয়েছেন বিচারক। মামলার তদন্ত র্কমকর্তা মিরপুর থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মন এবং তার তদারককারী পুলিশ র্কমকর্তাকে 'অদক্ষ ও অযোগ্য' বলে র্ভৎসনা করেছেন তিনি। 'ত্রুটিযুক্ত' অভিযোগপত্র দাখিল করায় নিবারণের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শক ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে। ফাঁসির রায় পাওয়া দুই আসামির মধ্যে টিপু ওরফে হীরা কারাগারে থাকলেও রমজান আলী রমজান পলাতক। যাবজ্জীবন সাজার আসামিদের মধ্যে হাসানুর রহমান রুবেল পলাতক; দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মিনহাজ, মো. শহীদ মোস্তফা, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ আছেন কারাগারে। হত্যাকা ে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সংস্থার আরেক নেতা আইয়ুব আলী এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নুরুল আলম সিদ্দীক, সোহাগ হোসেন হাওলাদার ও ইয়াকুব আলীকে খালাস দিয়েছে আদালত। মামলার বিবরণে জানা যায়, জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সংস্থার সম্পদোর ভোগদখল এবং সংগঠনের নির্বাচন নিয়ে সংগঠনের মহাসচিব খলিলুর রহমানের সঙ্গে মিনহাজ ও আইয়ুব আলী হায়দারের বিরোধ ছিল। ওই দ্বন্দ্বের জেরে ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি শাহ আলীবাগ জনতা হাউজিংয়ের ৩৩ নম্বর বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয় খলিলুরকে। তার স্ত্রী মোসাম্মৎ হাসিনা পারভীন পরদিন মিরপুর মডেল থানায় ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মন ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এ মামলার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী নূরুজ্জামান শুভকে ট্রাইবুনাল থেকে বার বার সমন পাঠানো হলেও পুলিশ তার মৃত্যু সনদ ট্রাইবুনালে দাখিল করে। পরে তাকে জীবিত অবস্থায় খুঁজে পায় ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। আদালতে হাজির করে তার সাক্ষ্য নেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজার আদেশ পাওয়া রুবেল আদালতে যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন, তাতে অন্য আসামিদের কথাও আসে। মামলার বিচারকালে বিচারক রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৫ জনের সাক্ষ্য শোনেন বলে এ আদালতের পেশকার আবুল কালাম আজাদ জানান। হত্যাকা-ে সাগর নামে এক আসামির প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার তথ্য তদন্তে এলেও তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে তার নাম না রাখায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারক। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, অন্ধদের সম্পত্তি যেনতেনভাবে ব্যবহার করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সংস্থা। ওই সম্পদ যাতে প্রকৃত অন্ধদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়, সেজন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঢাকার জেলা প্রশাসককে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে বলেছেন বিচারক।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।