১৩ মার্চ, ১৯৭১। অনিবার্য হয়ে ওঠে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। লাখো মুক্তিকামী বাঙালির উত্তাল আন্দোলন-সংগ্রাম ও সশস্ত্র প্রস্তুতিতে শঙ্কিত হয়ে পড়েন পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা। বিরোধী দলের নেতারা পাকিস্তানের অনিবার্য ভাঙন নিশ্চিত বুঝতে পেরে একাত্তরের
এদিন জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক শেষে অবিলম্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। কিন্তু সেদিকে তোয়াক্কা না করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে স্বাধীনতার সংগ্রাম দমনে নিষ্ঠুর পরিকল্পনা নিতে থাকে হানাদাররা।
একাত্তরের মার্চ মাসে যত দিন গড়াচ্ছিল, স্বাধীনতাকামী বাঙালির ঐক্য ততই সুদৃঢ় হচ্ছিল। বঙ্গবন্ধুর উদাত্ত আহ্বানে তখনকার চলমান অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে নিবিড়, প্রত্যয়দৃঢ় একাত্মতা ঘোষণা করছিল স্বাধীনতাকামী বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন। পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্ক্ষায় আন্দোলন-সংগ্রামে মুখর জনপদ। প্রতিটি গৃহে ও ভবনের শীর্ষে উড়ছে বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা আর কালো পতাকা। অবিরাম চলছে সভা-শোকসভা। অসহযোগ আন্দোলনের এক সপ্তাহ পর দেশ পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, শিক্ষকসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাকিস্তানি সামরিক শাসকরা বাংলার দামাল ছেলেদের এ আন্দোলন দেখে চিন্তিত হয়ে পড়ে।
আজ সামরিক শাসন কর্তৃপক্ষ ১৫নং সামরিক আইন জারি করে আগামী ১৫ মার্চ সকাল ১০টার মধ্যে প্রতিরক্ষা বিভাগের বেসামরিক কর্মচারীদের কাজে যোগদানের নির্দেশ দেয়। নির্দেশে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজে যোগদানে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত ও পলাতক ঘোষণা করে সামরিক আদালতে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদ- দেয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।