যৌবনে অনেক সিনেমা দেখতাম। সিনেমায় তখন গল্প ছিল, বাস্তবতা ছিল, সমাজ গঠনের নির্দেশনা ছিল, রাজনীতি ছিল, সর্বপরি ছিল বিনোদন। বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন আর সিনেমা দেখা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু কয়েকদিন আগে কাকতালীয়ভাবে দেখলাম, নবাব সিরাজউদ্দৌলা নামের ছায়াছবিটি। মুর্শিদাবাদ থেকে পরাজিত নবাব যখন পাটনায় পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন মাঝির কণ্ঠে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল_ নদীর এপার ভাঙে, ওপার গড়ে এইতো নদীর খেলা। সকাল
বেলা আমির যে জন গরিব সন্ধা বেলা।
আমার দীর্ঘ এ জীবনে ব্রিটিশ শাসন দেখলাম, দেখলাম পাকিস্তানি শোষণ, আবার দেখতে হলো বাংলাদেশের রাজনীতির নামে নানা পজেটিভ-নেগেটিভ রঙ্গলীলা। এখানে অনেক ফুটপাতের লোককে আমি আমির হতে দেখেছি, আবার অনেক আমিরকে নিঃস্ব, রিক্তহস্তে করুণ বিদায় নিতে দেখেছি।
আমি দেখেছি, রাজনীতির নামে চাঁদাবাজি করে সংসার চালানো নিঃস্ব মানুষটি কিভাবে
গুলশান-ধানমন্ডি-বারিধারায় আভিজাত্যের প্রাসাদ সাজিয়েছে। আবার এটাও দেখেছি রাজনীতি করতে করতে পৈতৃক ভিটেমাটি খুঁইয়েছে অনেকেই। এগুলো সবই যে কর্মফল তা-ও নয়। বরং এগুলো জীবনের উত্থান-পতনের রঙ্গলীলা। ঐ যে মাঝির কণ্ঠে ধ্বনিত হলো_ সকাল বেলা আমির যে জন, ফকির সন্ধা বেলা।
পুনশ্চ: আমরা অনেক ইতিহাস জানি কিন্তু ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিই না। আমরা যখন মসনদে বসে থাকি তখন বিশ্বাস করি মসনদই আমাদের একমাত্র ঠিকানা। কিন্তু যে শহরে মসনদ আছে, সেই শহরেই কারাগারও আছে_ তা মানতে চাই না।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।