জন্মের এক মাস পরে হাইড্রোসেফালাস রোগে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে মাথা বড় হতে থাকে আলালের। বর্তমানে ১৪ বছর বয়সী আলাল মাথার ভাড়ে নড়াচড়া করতে পারে না। সারাদিন বারান্দায় একটি খাটে শুয়ে থাকে। আর আশ্চর্যজনক কথা হচ্ছে, জন্মের পর থেকে এখন পর্যন্ত আলাল পানি পান করেনি। শুধু ভাত খায়। তারপরও ২৪ ঘন্টায় ৪ থেকে ৬ বার প্রস্রাব করে সে। ছেলের সুস্থতার জন্য চিকিৎসক ও হৃদয়বান
মানুষদের সহযোগিতা চেয়েছেন অসহায় আলালের মা আলেয়া বেগম।
আলালের বাড়ি গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামে। আলালের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রিকসাচালক হাবিল মিয়ার প্রথম স্ত্রী আলেয়া বেগমের চার সন্তানের মধ্যে আলাল সবার বড়। গত বছরের অক্টোবর মাসে প্রতিবেশি বিধবা আজিনা বেগমকে বিয়ে করেন হাবিল। এরপর থেকে তারা দুজনে মুন্সিগঞ্জে থাকেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর হাবিল মিয়া আলেয়া বেগমকে ভরণপোষণের কোন টাকা দেন না। আলেয়া বেগম এখন বাবার বাড়িতে থাকেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে চার ছেলে-মেয়ের সংসার চালান তিনি। এছাড়া মাটি কাটার কাজ, কৃষি জমিতে ও ধান মাড়াইয়ের কাজ করেন আলেয়া বেগম। এতে যা পান তা দিয়েই কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে সংসার চালাচ্ছেন আলেয়া বেগম। ফলে আর আলালের চিকিৎসার টাকা যোগাড় করতে পারেন না মা আলেয়া বেগম। অন্য তিন সন্তানের মধ্যে একজন দ্বিতীয় ও আরেকজন শিশু শ্রেণিতে পড়ে এবং অপরজনের বয়স মাত্র ২ মাস।
আলেয়া বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ১ মাস বয়সে আলাল প্রথমে কান্নাকাটি শুরু করলে তাকে শহরে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। ডাক্তার জানায় আলালের মাথার হাড় বৃদ্ধি পাচ্ছে। মগজে পানি জমেছে। ওষুধ খাওয়ানোর পরও অসুখ ভালো হয়নি তার। পরে ৮ বছর পর্যন্ত গাইবান্ধা, রংপুর ও ঢাকার ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা চললেও আর সুস্থ হয়ে ওঠেনি আলাল। টাকার অভাবে ৬ বছর থেকে বন্ধ হয়ে আছে আলালের চিকিৎসা। ফলে দিন দিন বড় হচ্ছে আলালের মাথা। এত করে সে আর মাথা তুলতে পারে না। বেশি নড়াচড়া করতে পারে না। আলেয়া বেগম আরো বলেন, সকালে আলালকে বারান্দায় একটি ভাঙা খাটে শুইয়ে রাখি। সেখানে সে সারাদিন একা একা থাকে। ক্ষিদে লাগলে কান্নাকাটি করে, আর পেটে জোড়ে জোড়ে চর মারতে থাকে। তখন ওকে খেতে দিলে সে থামে। কিন্তু কখনো পানি খায় না। আলালের বাবা আমাদের কোন খোঁজ নেন না। টাকার অভাবে ছেলেটার চিকিৎসাও করাতে পারছি না। প্রতিদিন শুধু চেয়ে চেয়ে ছেলেটার কষ্ট দেখি। বেশিক্ষণ আলালের সামনে থাকতে পারি না। কবে ছেলেটা ভালো হবে সে আশায় দিন গুনি।
দেশের চিকিৎসক ও হৃদয়বান মানুষদের সহযোগিতা চেয়েছেন মা আলেয়া বেগম। ০১৭২৭-০৫৭৭৭০ এই নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে আলালের পরিবারের সাথে।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।