রাজাপুরে দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দের যাচাই-বাছাই নিয়ে ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যানদের বিরোধ
রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্পের ঘর বরাদ্দের যাচাই-বাছাই নিয়ে মতবিরোধ জটিল আকার ধারণ করেছে। ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মধ্যে এ বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানদের বক্তব্য তাদের তালিকার কোনো মূল্যায়ন হচ্ছে না। নির্বাহী কর্মকর্তার ইচ্ছানুযায়ী তালিকা চূরান্ত করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন চেয়ারম্যান মেম্বারদের তালিকার বাইরে অনেক মানুষ ঘর পাবার যোগ্য হলেও তালিকায় তাদের নাম আসেনি। এদিকে দুর্যোগ সহনশীল প্রকল্পের তালিকা গত ২১ এপ্রিলের মধ্যে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়নি চেয়ারম্যনগণ। তাই ১২ মে'র মধ্যে এই তালিকা দেয়ার শেষ দিন ধার্য করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হাওলাদার। এ প্রসঙ্গে বড়ইয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম মন্টু বলেন, এই ঘর পাবার সুবিধাভোগীদের তালিকা আমাদের কাছ থেকে নিয়ে ইউএনও তার ইচ্ছানুযায়ী চূড়ান্ত করেন।
তাই আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালিকা আমরা দিলেও দুর্যোগ প্রকল্পের তালিকা দেইনি। যদিও তিনি ১২ মে ঐ তালিকা দেয়ার চূড়ান্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। আমাদের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে তা বাতিল করা হলে তাহলে আমাদের তালিকা দিয়ে লাভ কি।
তালিকা যাচাই বাছাইয়ের বিষয়ে আমাদের কোনো প্রাধান্য না থাকায় এলাকায় বিব্রতকর অবস্থায় পরতে হয়। এই ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলাকায় ছাউনি বা খুপড়ি ঘর আছে কিনা তাই খুঁজছেন। এখন কেউ সেরকম খারাপ অবস্থায় নেই বলে এ ধরনের ঘরও নেই। বাস্তবতা বুঝতে হবে। তাই আমরা যার মোটামুটি ঘর প্রয়োজন তাকেই যাচাই বাছাই তালিকায় রেখে ছিলাম।
এ প্রসঙ্গে রাজাপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মজিবর বলেন, আমরা যে তালিকা দিয়ে ছিলাম তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার তহশিলদারের মাধ্যমে যাচাই বাছাই করিয়েছে। আমরাতো কারো কাছ থেকে কোনো স্বার্থের বিনিময়ে নামের তালিকা করিনি। তাছারা বলে ছিলাম মাঠে গিয়ে দেখে তালিকা দেই। নির্বাহী কর্মকর্তাই বলেছেন আগে তালিকা দিতে। তাই ১৯/২০ হতেই পারে।
তাছাড়া দুদুর্যোগ সহনশীল প্রকল্পের তালিকা আমার কাছে চাওয়া হয়নি বলে আমি দেইনি। অপরের জায়গায় থাকে ঘর নেই আমি এমন একজন প্রতিবন্ধীর নাম দিয়ে ছিলাম। তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। সে কি ঘর পেতে পারে না। এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ বলেন, চেয়ারম্যানদের দুর্যোগ প্রকল্পের তালিকা দিতে দেরি হওয়ায় আমরা মাঠে গিয়ে যাচাই বাছাই করছি। এ তালিকা তারা দিতে পারলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালিকা যাচাই বাছাইয়ের সাথেই দ্রুত এ কাজ সম্পন্ন করা যেত। এ প্রসঙ্গে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হাওলাদার বলেন, রাজাপুরে দুর্যোগ সহনশীল বাসগৃহ ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ঘর বরাদ্দ পাওয়া গেছে। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানগণ আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালিকা দিলেও দুর্যোগ প্রকল্পের তালিকা না দেয়ায় যাচাই বাছাই করতে মাঠে নামতে হয়েছে। যদিও ১২ মে তারিখের মধ্যে তালিকা দিতে বলা হয়েছে। এসব তালিকার মধ্যে ঘর পবার যোগ্য এমন অনেকের নাম পাওয়া যাচ্ছে না। যাচাই বাছাই কমিটি তালিকার যথার্থতা যাচাই করেই অনুমোদন দেবে।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।