ঈদ বাজার
কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা জুতায়
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
দেশজুড়ে ঈদকেন্দ্রিক জুতার বাজারে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে গত কয়েক বছর ধরেই। দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ড আর নন ব্র্যান্ডের আমদানি করা চামড়া আর সিনথেটিকের জুতা স্যান্ডেলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। তবে দাম একটু চড়া হলেও ব্র্যান্ডগুলো দিচ্ছে টেকসই আর আরামদায়ক জুতার নিশ্চয়তা। বিপরীতে সাশ্রয়ী দামে বাহারি ডিজাইন আর আকর্ষণীয় রঙের জুতা-স্যান্ডেলের পসরা সাজিয়েছে নন ব্র্যান্ড শপগুলো। যদিও এসব পণ্যের স্থায়িত্ব নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ক্রেতাদের।
ঈদ আয়োজনে পছন্দের পোশাকের সঙ্গে থাকতে হবে মানানসই জুতা। তা না হলে রং হারাবে উৎসব, মোটামুটি এমন ভাবনাতেই ঈদুল ফিতরে দেশজুড়ে বড় অঙ্কের লেনদেন হয় শুধু জুতার বাজারেই। ঈদ বাজারে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় দেখা যায় জুতা পছন্দ হলেও কখনো কখনো মেলে না সাইজ, আবার সাইজ মিললেও সায় দেয় না পকেট। সেজন্যই অনেকটা আগেভাগেই ক্রেতাদের সরব উপস্থিতি জুতার বাজারে।
রাজধানীর জুতার বাজার মূলত দুইভাগে বিভক্ত। ব্র্যান্ড আর নন ব্র্যান্ড। দীর্ঘস্থায়ী আর আরামদায়ক জুতার খোঁজে বাটা, অ্যাপেঙ্, বে, ক্রিসেন্টে ছুটছেন ক্রেতারা। আবার একটু চাকচিক্যময় ডিজাইনের জুতা কিনতে ভিড় করতে হচ্ছে চৌরঙ্গিতে। যেখানে অর্ধশতাধিক দোকান ভর্তি আমদানি করা চীনা আর থাই জুতা স্যান্ডেলে। এক ক্রেতা বলেন, ব্র্যান্ডেরগুলো একটু টেকসই হয়। কিন্তু এখান থেকে একটু দেখেশুনে কিনলে অনেকদিন টেকসই থাকে এমন জুতা-স্যান্ডেল পাওয়া যায় এবং এখানে অনেক ধরনের ভ্যারাইটিজ ডিজাইনও চোখে পড়ে। শুধুমাত্র জুতা-স্যান্ডেলের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বাজারে ক্রেতার চাহিদা মেটাতে আউটলেটগুলো জুতা-স্যান্ডেলের ডিজাইনে এনেছে ভিন্নতা। পাশাপাশি চামড়ার পাশাপাশি সিনথেটিকের জুতা-স্যান্ডেল ক্রয়ে এ বছর ঢাকার প্রায় সব আউটলেটেই ক্রেতারা পাচ্ছেন নানা অঙ্কের মূল্যছাড় আর ক্যাশব্যাক অফার।
সাধারণ সময়ে জুতার চাহিদা ঈদের সময়ে তিনগুণ বেড়ে যায়। নিত্যনতুন ডিজাইনের সঙ্গে চামড়া এবং সিনথেটিক দিয়ে তৈরি জুতার দামেও পাওয়া যায় ভিন্নতা। তবে বিক্রেতাদের দাবি, সব শ্রেণীর মানুষের কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন ধরনের জুতা ও স্যান্ডেল তৈরি করা হয় এবং সেভাবেই দামকরণ করা হয়। বিক্রেতাদের কথার সত্যতাও পাওয়া গেল জুতার বাজার ঘুরে। নীলক্ষেত এলাকার এ্যাপেঙ্রে শোরুমে ১ হাজার ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত জুতা বিক্রি হচ্ছে। দামের ভিন্নতা সম্পর্কে ঐ শোরুমের বিক্রেতারা জানালেন, মূলত টেকসই ক্ষমতা এবং ডিজাইনের কারণেই দামের এই তারতম্য। যে কারণে সব শ্রেণীর মানুষই তাদের চাহিদা এবং সাধ্য অনুযায়ী জুতা কিনে থাকেন।
রাজধানীর মালিবাগে ইটালীয় ব্র্যান্ড 'লোটো'র শোরুমে ঢুকে দেখা গেল, হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিভিন্ন ধরনের স্যান্ডেল বিক্রি হচ্ছে। তবে এর ব্যতিক্রম দেখা গেল শাহজাদপুরের সুবাস্তু নজর ভ্যালী বিপণী বিতানে। এখানে ৫০০ টাকার ভেতরে যেমন স্যান্ডেল বিক্রি করছেন দোকানীরা তেমনি আড়াই হাজার টাকার ওপরেও স্যান্ডেল বিক্রি করছেন তারা। সুবাস্তু নজর ভ্যালীর এক জুতা বিক্রেতা বলেন, সাধারণত রেঙ্েিনর তৈরি স্যান্ডেলের দাম কিছুটা কম। সেই অনুযায়ী এ ধরনের জুতা-স্যান্ডেল ঐ ধরনেরই টেকসইয়ের নিশ্চয়তা দেয়। অন্যদিকে চামড়ার জুতা-স্যান্ডেল মান অনুযায়ী বহুদিন টেকসই হয়, যে কারণে এগুলোর দাম কিছুটা বেশি।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।