গ্রামবাসীর পাল্টাপাল্টি বক্তব্য
শাহজাদপুরে স্কুলছাত্রের হত্যাকারী নিয়ে ধূম্রজাল এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
শাহজাদপুর উপজেলার চরবর্ণিয়া গ্রামে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ইউনুস আলী (১৪)'র হত্যাকারী কে! পুুলিশ নাকি সেনা সদস্য? এ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধুুম্রজাল। পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছে গ্রামবাসী ও পুুলিশ ।
জানা গেছে, ঈদের আগের দিন গণ ৪ জুন মঙ্গলবার সকালে উপজেলার গালা ইউনিয়নের চর বর্ণিয়া গ্রামে আধিপ্যু বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জের ধরে সায়েম ও আখের শেখ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষর্ বাধে। এসময় উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষের আঘাতে আখের গুরুতর আহত হলে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুুগ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষর্ শুরু হয়। এসময় পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে এবং পুুলিশের শর্টগানের গুলিতে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ইউনুুস আলী (১৪) নিহত হয়। এসময় সংঘর্ষকারীদের হামলায় উপ পুুলিশ পরিদর্শক শরিফুল ও আফজাল আহত হয়। এর মধ্যে এস আই আফজালের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েও পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫/২০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ঐদিন রাতেই সেনা সদস্য পলাশসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুুলিশ । নিহতের বাবার মামলা ও পুুলিশের বক্তব্য, সংঘর্ষ চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার সময় এক কনস্টেবলের হাতে আঘাত লেগে শর্টর্গানটি মাটিতে পড়ে গেলে সেনা সদস্য পলাশ শর্টর্গানটি তুলে নিয়ে গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলি লেগে ইউনুুস নামের এক স্কুলছাত্র ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়েও একটি মামলা দায়ের করে।
অপরদিকে এ হত্যাকা-ের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিতে শুরু করেছে এলাকাবাসী। কেউ কেউ বলছেন সেনা সদস্যের গুলিতে মারা গেছে, আবার কেউ কেউ বলছে পুুলিশের ছোড়া গুলিতেই মারা গেছে। এ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধুম্রজাল। প্রকৃত হত্যাকারী কে? সেনা সদস্য নাকি পুলিশ এ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে, গালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আ. সামাদ মুঠোফোনে প্রতিবেদককে বলেন, আসল ঘটনা সামনে আসছে না। যারা ঘটনাস্থলে ছিলো তাদের কাছে শুনেছি পুলিশের ছোড়া গুলিতেই ইউনুুসের মৃৃত্যু হয়েছে। প্রকৃত ঘটনাটি উদঘাটন করা দরকার। এদিকে গালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুুল খালেকের ছোট ভাই মো. মিনিষ্টার বলেন, পুুলিশের গুলিতে ইউনুস মারা গেছে। তিনি বলেন, নিহতের বাবা প্রথমে বলেন পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। পরে আবার বলেন সেনা সদস্যের গুুলিতে মারা গেছে।
এ ব্যাপারে, শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান ও ওসি (তদন্ত) রাকিবুল হুদা বলেন, সেনা সসস্য পলাশ কনস্টেবলের হাতে আঘাত করার পর হাত থেকে শর্টগান মাটিতে পড়ে যায়। এসময় ঐ শর্টগান থেকে গুলি ছোড়ে এতে ইউনুস ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে সেনা সদস্য পলাশ উদ্দিন মোল্লাকে ১ নম্বর আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে । এদিকে গণকাল মঙ্গলবার সকালে সেনা সদস্য পলাশের ফাঁসির দাবিতে শাহজাদপুর পৌর সদরে বিক্ষোভ ও প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে চরবর্ণিয়া গ্রামবাসী।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।