
মায়ানমারের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংলাপে রোহিঙ্গা সমস্যা প্রাধান্য পাওয়ার কথা থাকলেও ইইউ বিস্ময়করভাবে বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। আশ্চর্যজনক যে, মানবাধিকারবিষয়ক সংলাপে রোহিঙ্গাদের মতো জাতিগত নিধনের বিষয়টি ছিল উপেক্ষিত। এমনকি এই দ্বিপক্ষীয় সংলাপে রোহিঙ্গা শব্দটিও পরিহার করা হয়েছে। তাহলে ইইউ মায়ানমারের গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে গুরুত্ব দিল কীভাবে? এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ২০১৪ সালে ইইউ এবং মায়ানমার এই দ্বিপক্ষীয় সংলাপব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা করে। যার লক্ষ্যই হলো, মায়ানমারকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সুরক্ষায় মৌলিক সনদগুলো স্বাক্ষর ও বাস্তবায়নে সহায়তা করা। অথচ গত ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সংলাপে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর জাতিগত নিপীড়ন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের বিষয়গুলো উপেক্ষা করে মায়ানমারের নির্বাচনের প্রতি সমর্থনের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যেখানে রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকারের বিষয়টিও ছিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সব বাদ দিয়ে নির্বাচনের বিষয় নিয়ে সংলাপ কতটা যুক্তিযুক্ত সে প্রশ্ন যেমন জোরালো হয়ে উঠেছে পাশাপাশি ইইউর মায়ানমারকে সন্তুষ্ট করার আচরণ আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কিন্তু এ নিয়ে জাতিসংঘের নির্লিপ্ত ভাব বাংলাদেশের জন্য হতাশাজনক।
এদিকে গত ৫ অক্টোবর ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের মায়ানমার সফর নিয়ে বাংলাদেশের একটি শ্রেণি বেশ পুলকিত। তাদের ধারণা ভারত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মায়ানমারকে চাপ দেবে। এখন পর্যন্ত যার কোনো প্রমাণ মেলেনি। বরং আমরা দেখেছি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিপীড়নের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইসরাইল থেকে মায়ানমারে যান এবং তার পরই রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রিত অবস্থায় আছে।
পুনশ্চ : রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসনে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। প্রতিবেশী ভারতের সাথে চীনকে আমাদের পাশে রাখতে হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের একার নয়। কাজেই সবাইকে বাংলাদেশের পাশে থাকা উচিত।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।