ঘূর্ণিঝড় সিডরের ১০ বছর
এখনও অনিরাপদ উপকূলবাসী বাঁধ সংস্কার অসমাপ্ত । আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হলেও তা অপ্রতুল
আমতলী প্রতিনিধি
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর রাতে ঘন্টায় ২১৫ কিলোমিটার বেগে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে ল-ভ- হয়েছে। দক্ষিণের জনপদ। আমতলী ও তালতলী উপজেলায় ২৯৭ জন মানুষের প্রাণহানী ঘটেছিল। নিখোঁজ হয়েছে ৪৯ জন জেলে। অগনিত গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছিল। বাড়িঘর, ফসলী জমি, রাস্তাঘাট, ভেরীবাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সুন্দরবনের গাছপালা ব্যাপক ক্ষতি হয়। সিডরের আজ ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু আজও উপকূলবাসীর জীবন অনিরাপদ। ঐ সময় অসচেতনতার কারণে সবচেয়ে প্রাণহানি ঘটে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী নিদ্রা, সখিনা, আশারচর, জয়ালভাঙ্গা ও ফকির হাট এলাকায়। যারা সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছিল তাদের প্রাণহানি ঘটেনি। বেশি প্রাণহানি ঘটেছে সাগরে অবস্থানরত জেলে। জেলেদের অসচেতনতার জন্য এত প্রাণহানি। গত ১০ বছরে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে তা অপ্রতুল। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ এখনো অসমাপ্ত। সিডরের পরে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। আমতলী ও তালতলীতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে ৩৫টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে যা অপ্রতুল। বড় ধরনের দুর্যোগ দেখা দিলে মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পরবে। এদিকে ৪৫ পোল্ডারে ৩ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমবিইএল। তারা এখনো বাঁধের ঐ ৩ কিলোমিটার কাজ সংস্কার করতে পারেনি। ফলে হুমকির মধ্যে রয়েছে বাঁধ ভাঙন করলিত এলাকার মানুষ। উপকূলের লক্ষাধিক মানুষ সাগর সংলগ্ন নিদ্রা, সখিনা, আশারচর, জয়ালভাঙ্গা ও ফকির হাট জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে। এখানে এখনো কোন সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ করা হয়নি।
সোনাকাটা ইউপি সদস্য আবদুস ছালাম হাওলাদার বলেন সাগরে জেলেরা যুদ্ধ সংগ্রাম করে বেঁচে থাকে। সিডরের এতবড় আঘাতেও তাদের মাঝে সচেতন ফিরে আসেনি। তিনি আরো বলেন বর্তমান মৌসুমে আশারচরে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করে কিন্তু এখানো কোন আশ্রয়কেন্দ্র নেই। কোন দুযর্োগ দেখা দিলে বড় ধরনের প্রাণহানীর আশংঙ্কা রয়েছে। আশার চরে জেলেদের নিরাপত্তার জন্য আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা প্রয়োজন। তালতলী তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের শাহ জালাল প্যাদা ও জসিম মিয়া জানান সিডরে বিধ্বস্ত তেতুলবাড়িয়া ও জয়ালভাঙ্গার ২ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এখনো নির্মাণ করা হয়নি। সামান্য বন্যা ও নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। গত ১০ বছর ধরে হুমকির মুখে এ এলাকার মানুষ বসবাস করছে। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন তেতুঁলবাড়িয়া ও জয়ালভাঙ্গা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এ বছর নির্মাণ করা হবে।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।