অবশষে ৬ ঘণ্টা পর সন্তানদের জিম্মি নাটকের অবসান ঘটেছে। বাবার হাতে নিহত ও জিম্মি থাকা ২ সন্তানকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ।
এ সময় পুলিশ এক সন্তানের লাশ ও আরেক সন্তানকে জীবিত উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে। আটক হয়েছে ঘাতক বাবা।
গতকাল বুধবার দুপুরে শাহবাগ থানা পুলিশ এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শাহবাগ থানার ওসি আবু হাসান জানান, রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় একটি বাসায় সাফায়েত নামে তিন বছরের এক শিশুকে তার বাবা হত্যা করেছে। এমন সংবাদ পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু বাসার ভেতর কোন মতেই ঢুকতে পারছিল না।
কারণ ভেতরে মরদেহের পাশে ধারালো দা হাতে আরেক সন্তানকে বুকে নিয়ে বসেছিলেন শিশুটির বাবা নুরুজ্জামান। তিনি কাউকে বাসায় ঢুকতে দেননি। অন্যদিকে নুরুজ্জামানের ভাই নুরুল হুদা উজ্জ্বলের দাবি শিশুটিকে তার বাবাই খুন করেছে।
ওসি আরও জানান, শিশুর বাবা নুরুজ্জামান কাজল-এর আগে মাদক গ্রহণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল। জেলে পাঠানো হয় তাকে। নুরুজ্জামানের ভাই নুরুল হুদা জানান, কাজলের ২ সন্তান। একজন সাফায়েত তার বড় ভাই সুবায়েত। তারা সাফায়েতের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সেখানে এসেছে। সকালে বাসায় ঢুকতে গিয়ে ও পারি নাই। নুরুজ্জামান একজন মাদকাসক্ত। তিনি যখন বাসায় ঢুকতে চেষ্টা করেছেন তখন নুরুজ্জামান তাকে দা দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করে। তখন সুবায়েত তার বাবার হেফাজতে হুদা আরও জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নুরুজ্জামান বাসা থেকে বের হয়ে পাশে থাকা মাদ্রাসায় গিয়ে জানায়, তার ছোট ছেলে সাফায়েত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।
এটা যেন মাইকে ঘোষণা করা হয়। তারপর মাদ্রাসার ছাত্রদের কোরআন খতম দেওয়ার জন্য নিয়ে যেতে চান। এ কথা বলার পর আব্দুল গাফফার নামে একজন খাদেম মাদ্রাসা থেকে তার সঙ্গে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান সাফায়েতের নিথর দেহ পড়ে আছে। তিনি দ্রুত সেখান থেকে বের হয়ে আসেন। এরপর নুরুজ্জামান দরজা লাগিয়ে সেখানে অবস্থান করেন। উদ্ধার অভিযানকালে র্যাব-২ এর একটি টিম অংশ নেয়। ঐ টিমের কর্মকর্তা এস আই শহীদুল ইসলাম জানান, তিনি ভেতরে দেখেছেন নুরুজ্জামান তার ছোট শিশুকে কাফনের কাপড় পরিয়ে টেবিলের রেখেছেন। এছাড়া বড় সন্তানকে বুকে জড়িয়ে বড় রামদা নিয়ে বসে আছেন। ঘরের জানালা দিয়ে ঐ কর্মকর্তা শিশুটির বাবার কাছে জিজ্ঞাসা করেন, তাদের কোন সাহায্য লাগবে কিনা। এসময় তার বাবা জানান, কোন সাহায্য লাগবে না ্আপনারা কেন এসেছেন, আপনারা চলে যান।
স্থানীয় এক বাসিন্দা আদিল জানান, কয়েক মাস আগে স্ত্রীকেও মারধর করে নুরুজ্জামান। প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করেন।
স্ত্রী নির্যাতন সইতে না পেরে বাচ্চা ২টি বাবার কাছে রেখে চলে যান। রাজধানীর বাংলামোটর ১৬ লিংক রোডের একটি বাসায় থাকতেন নুরুজ্জামান।
এদিকে এ ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের একটি দলও অংশ নেয় উদ্ধার অভিযানে। নুরুজ্জামানের স্ত্রীর নাম আমেনা বেগম। তিনি কয়েক মাস আগে নির্যাতন সইতে না পেরে নিজ সন্তানদের ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে যান। তার স্বামী একজন মাদকাসক্ত। কোন কারণ ছাড়াই স্ত্রীকে মারধর করত নুরুজ্জামান।
আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন।